Mathematics!! একসময় আমার প্রিয় সাবজেক্ট ছিলো। আর গণিতের প্রতি ভালবাসা থেকে স্বপ্ন দেখেছিলাম, ইঞ্জিনিয়ার হব। কারন আমি শুনেছিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গণিতে ভাল হতে হয়। গণিতে খুব ভাল না হলেও ভাল ছিলাম। ধীরে ধীরে সেই গণিত আজ সবচেয়ে অপছন্দের তালিকায় চলে যাচ্ছে!!

যখন গণিত শেখা শুরু হয়, সবকিছুই ভাল ছিল। গণিত করতে ভাল লাগত। তখন মন ভাল করার জন্য গণিত করতাম। গণিত ছিলো ফুল মার্কস পাওয়ার মত একটা বিষয়। তাই ফুল মার্কস পাওয়ার জন্য বেশি বেশি করে গণিত করতাম। পরীক্ষা হলে যেতাম ফুল মার্কস পাওয়ার আশা নিয়ে। যতদূর মনে পড়ে,পেয়েছিলামও বেশ কয়েকবার ‘ফুল মার্কস’।

এরপর এক পর্যায়ে এসে সেই ফুল মার্কস নেমে এলো ‘আশিতে’। গণিত করতাম বেছে বেছে গুরুত্বপূর্ণ দেখে কিংবা কোনটা বোর্ডে বেশিবার এসেছে সেটা দেখে। পরীক্ষা হলে যেতাম কমপক্ষে আশি পাওয়ার টার্গেট নিয়ে। আশি পেতেই হবে, আশি হলেই হবে। শুধু ‘আশি’ আর কিছু চাই না।

এরপর?

শুরু হলো ভার্সিটি জীবন। শুনেছিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং মানে গণিত। তা ভাল কথা,কিন্তু কি ধরনের গণিত!! ধীরে ধীরে জীবন কঠিন হবে, গণিতও কঠিন হবে, ঠিক আছে। তাই বলে এত পরিবর্তন!! এ পর্যায়ে আশি নেমে এলো সোজা ‘পাস’ এ। পাস করলেই খুশি। গণিতের প্রতি যে ভালবাসা ছিলো তা বিলুপ্তপ্রায়। এখন গণিত করা হয় ঠেলায় পড়ে। অল্পকিছু টপিক পড়ে শুধু পাস করার দরকার। পরীক্ষা হলে যাই পাসের আশা নিয়ে। আগে কোনমতে পাস দরকার। আগে যেখানে ফুল মার্ক পেতাম, সেখানে এখন পাস করাই দায়। সেই পাস নিয়েও আবার কত টানাটানি। টানাটানিতে কারো সিদ্ধান্ত নির্দেশক চিহ্ন কখনো পাস লাইন পার হয় কারো বা হয় না। এপর্যন্ত গণিতের যাত্রা এতটুকুই - ‘ফুল মার্ক’ থেকে ‘পাস’। সামনে কি হবে তা জানা নাই….

[গল্পের সাথে কারো জীবনের পুরো বা আংশিক মিল থেকে থাকলে এর জন্য আমি দায়ী না ] এটা শুধু আমার জীবনের গল্পই নয়, এ গল্পের সাথে মিল আছে অনেকের। অনেকেই আজ আমার মত গণিত করতে ভয় পায়। গণিতে শুধু পাস চায়। গণিতের প্রতি এ ধরনের মনোভাব সৃষ্টির কারন কি, তা আমি নিজেও জানি না। কেউ জানলে দয়া করে জানাবেন, সাথে কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তা জানালে খুশি হব। আমার মতে হতে পারে অল্প সময়ে অনেক বড় সিলেবাস কিংবা সেরকম শিক্ষকের অভাব যিনি ছাত্রদের বুঝবেন বুঝাবেন, শুধু সিলেবাস শেষ করার তালে থাকবেন না। আরো অনেক কারন থাকতে পারে। সাথে এটাও স্বীকার করি যে নিজেরও কিছু গাফিলতি আছে, দোষ আছে। অনেকে হয়তো বলবে ঠিকমত প্রাকটিস হয় না। হ্যা,হয় না। কিন্তু কেনো হয় না,সেটাই তো বুঝি না!!! আমার নাহয় সময় হয় না কারন আমি এখানে সেখানে সময় নষ্ট করি। অন্যরা? মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন ভাল করে সেটা অতি নগণ্য (n টেন্ডস টু 0)

বি.দ্র. আমি চেস্টা করেছি। যদিও চেস্টাটা আরো আগে শুরু করার দরকার ছিলো।

**পরিশেষে লেখাটা উতসর্গ করতেছি সেইসব মহান ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে, যারা বলিতেন/বলেন “ভার্সিটিতে উঠো তখন আরাম করিও। কারন ভার্সিটিতে তেমন পড়ালেখা নাই,দিনে দুইঘন্টা পড়িলেই হয়। ( কিন্তু ভার্সিটি তে দুইঘন্টা পড়ার সময় বের করা!! হাহাহা :D ) উহ্য।” **